এবার রাজশাহীর তানোর উপজেলা পোস্ট অফিসে নিজের জমানো দুই লাখ টাকার হদিস না পেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন এক নারী। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারীর নাম পারুল বেগম। তিনি ওই উপজেলার গোকুল গ্রামের মৃত এনামুল হাসান রনির স্ত্রী।
এদিকে পারুল বলেন, ‘পাঁচ বছর সাত মাস হলো পোস্ট অফিসে দুই লাখ টাকা রেখেছি। পুরো টাকাই গায়েব। আমার স্বামী ব্লাড ক্যানসারে মারা গেছেন। আমার এতিম বাচ্চা আছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। মেয়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমি নভেম্বর মাসে টাকা পাব বলে ডিসেম্বর মাসে জামাই-বিটিকে (মেয়ে) এক লাখ টাকা দেয়ার কথা আছে। ৬ মাস থেকে ঘুরছি। তারা আজ আসো, কাল আসো বলে ঘুরাচ্ছে। আমি কী করবো?’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তানোর পোস্ট অফিসে পারুলসহ ৩০০ গ্রাহকের জমানো টাকা গায়েব হয়ে গেছে। টাকা পেতে কয়েক দফা তানোর পোস্ট অফিসে ঘুরেছেন পারুল বেগম। এর আগেও তিনি তানোর পোস্ট অফিসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। একইভাবে বৃহস্পতিবারও আত্মহত্যার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে থামায়। তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
পরে তানোর পোস্ট অফিসের লোকজন তাকে রাজশাহী পোস্টমাস্টার জেনারেলের কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। পরবর্তীতে পোস্ট অফিসের কর্মীরা পারুল বেগমসহ আরও কয়েকজন ভুক্তভোগীকে রাজশাহীতে এনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন।
এ বিষয়ে তানোর উপজেলা পোস্টমাস্টার আবদুল মালেক বলেন, ‘দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই পোস্ট অফিসের গ্রাহক ৩০০ জন। তাদের মধ্যে কতজনের টাকা আত্মসাৎ হয়েছে সেটি তদন্তের বিষয়। অফিসে পারুল নামের এক নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তিনিসহ কয়েকজন ভুক্তভোগীকে রাজশাহী বিভাগীয় পোস্ট অফিসে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কথা বলেছেন। তারা টাকা পাবেন, তবে সময় লাগবে।’
এদিকে তানোর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ভুক্তভোগী পারুল তানোর পোস্ট অফিসে এসে টাকা না পেয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেন। তখন থানায় খবর দিলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে তাকে তানোর পোস্ট অফিসের কর্মীরা রাজশাহী ডাক বিভাগ অফিসে যেতে বলেন। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি।’